দ্য টাইমস নিউজ বিডি ডেস্ক: নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত। ঈমানের পরই নামাজের স্থান। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে নামাজ আদায়ের জন্য কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং নামাজ ছেড়ে দেওয়ার ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।
কোরআনের নির্দেশ
মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা মুমিনদের জন্য অবশ্যকর্তব্য।’ (সুরা নিসা: ১০৩)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা নামাজ কায়েম করো, জাকাত আদায় করো আর রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু করো।’ (সুরা বাকারা: ৪৩)
নামাজের ফজিলত
নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে আর আল্লাহর জিকিরই সবচেয়ে বড়।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
কেয়ামতের দিন নামাজই আলো হবে
রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যত্নের সঙ্গে আদায় করবে, কেয়ামতের দিন এ নামাজ তার জন্য আলো হবে। তার ঈমান ও ইসলামের দলিল হবে এবং তার নাজাতের ওসিলা হবে।’ (মুসনাদে আহমদ: ৬৫৭৬)
নামাজ না পড়ার ভয়াবহ পরিণাম
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘বান্দা এবং শিরক ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে সালাত ছেড়ে দেওয়া।’ (সহিহ মুসলিম: ১৪৮)
জাহান্নামের হুমকি
পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘(জাহান্নামিদের জিজ্ঞাসা করা হবে) তোমাদের কোন জিনিস সাকারে (জাহান্নাম) নিক্ষেপ করেছে? তারা বলবে, আমরা সালাত আদায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না।’ (সুরা মুদ্দাসসির: ৪২-৪৩)
ইহকালীন শাস্তি
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির আছরের সালাত কাজা হয় তার পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ সবই যেন ধ্বংস হয়ে গেল।’ (সহিহ মুসলিম: ১৩০৪)
নামাজ ছাড়ার যে শাস্তি নবীজি দেখেছেন
এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, নবীজিকে এমন এক ব্যক্তিকে দেখানো হলো- যে চিত হয়ে শুয়ে আছে। অন্য এক ব্যক্তি পাথর নিয়ে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। সে পাথর দিয়ে শুয়ে থাকা ব্যক্তির মাথায় আঘাত করছে এবং থেঁতলে দিচ্ছে। যখন সে পাথর নিক্ষেপ করছে তা গড়িয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। লোকটি গিয়ে পাথরটি পুনরায় তুলে নিচ্ছে এবং তা নিয়ে ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই লোকটির মাথা পুনরায় পূর্বের মতো ভালো হয়ে যাচ্ছে। সে আবার লোকটির কাছে ফিরে আসছে এবং তাকে পূর্বের মতো শাস্তি দিচ্ছে। নবীজি তার পরিচয় জানতে চাইলে বলা হলো- এ ব্যক্তি ফরজ নামাজ না পড়েই ঘুমিয়ে যেত।’ (রিয়াদুস সালেহিন: ১৫৪৬)
দুনিয়াবি শাস্তি
বিখ্যাত গ্রন্থ শারহুল আকিদাতুত তাহাবিতে নামাজ না পড়ার ৬টি দুনিয়াবি শাস্তির উল্লেখ রয়েছে:
১. জীবনের বরকত উঠিয়ে নেওয়া হবে
২. চেহারা থেকে নূর উঠিয়ে নেওয়া হবে
৩. ভালো কাজের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে
৪. দোয়া কবুল হবে না
৫. আল্লাহ ও ফেরেশতা অসন্তুষ্ট থাকবেন
৬. ইসলামের শান্তি থেকে বঞ্চিত হবে
(শারহুল আকিদাতুত তাহাবি: ২৬৮)
নামাজ মুমিন-কাফেরের মধ্যে পার্থক্যকারী। এটি ইসলামের ভিত্তি ও মুমিনের মিরাজ। নামাজ ছেড়ে দেওয়া মারাত্মক অপরাধ, যার পরিণাম ইহকাল ও পরকালে ভয়াবহ। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত যথাসময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা।-পিএনএস
দ্য টাইমস নিউজ বিডি