দ্য টাইমস নিউজ বিডি ডেস্ক: ৪৭ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউজের ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধের ঘোষণা দেন। শত্রু বা মিত্র দেশ কেউই বাদ যায়নি ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য যুদ্ধের এ খড়গ থেকে। রিপাবলিকান প্রশাসনের আরোপিত বর্ধিত শুল্ক ঘোষণার পর দেশগুলো মার্কিন সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসে।
বেশ কয়েক মাস ধরে আলোচনার পর স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ৯০টিরও বেশি দেশের ওপর নতুন শুল্কহার ঘোষণা করেছে দেশটির প্রশাসন। সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ পর্যন্ত রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
আরোপিত নতুন শুল্কের তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৬টি দেশের ওপর ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপ হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান এবং মিয়ানমার।
বাংলাদেশ: বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে দেশটি।
ভারত: ট্রাম্প ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছেন। এর কারণ হিসেবে বছরের পর বছর ধরে দীর্ঘদিনের শত্রু রাশিয়ার কাছ থেকে হ্রাসকৃত মূল্যে তেল কেনার বিষয়টি সামনে এনেছে মার্কিন প্রশাসন।
এ বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারত আমাদের বন্ধু, কৌশলগত অংশীদার। কিন্তু এই মিত্রতা এখন পর্যন্ত শতভাগ পর্যায়ে পৌঁছায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী যেসব দেশ পণ্য রপ্তানি করে, তাদের পণ্যে কম শুল্ক বসানোর কারণে ভারতীয় রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিশেষ করে শ্রমনির্ভর ও উচ্চমূল্যের ইলেকট্রনিক পণ্যে এর প্রভাব বেশি পড়বে।
পাকিস্তান: দিল্লির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত ইসলামাবাদ এক্ষেত্রে বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। নতুন চুক্তিতে পাকিস্তানের শুল্ক নেমেছে ১৯ শতাংশে। পাকিস্তানের মোট রফতানির প্রায় ৬০ শতাংশ হচ্ছে টেক্সটাইল, যার বেশির ভাগই যুক্তরাষ্ট্রে যায়।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্ক উষ্ণ হয়েছে। এমনকি পাকিস্তান গত জুন মাসে ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে। এই তুলনামূলক কম শুল্ক পাকিস্তানের তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ সুবিধা এনে দিতে পারে।
শ্রীলংকা: গার্মেন্টস খাতে বাংলাদেশের প্রতিযোগী হিসেবে পরিচিত শ্রীলংকার ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এটিকে কলম্বোর নতুন বামপন্থি সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আফগানিস্তান: তালেবান শাসনে থাকা কাবুলের ওপর দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে কম মাত্র ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। নতুন এ শুল্কহার যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশটির অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে সহায়ক হতে পারে।
মিয়ানমার: নাইপিদোর ক্ষমতায় থাকা জান্তা সরকারকে পিকিংপন্থি হিসেবে চিহ্নিত করে ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যে নতুন এ অতিরিক্ত শুল্কহারকে দেশটির অর্থনীতির জন্য মরার ওপর খড়ার ঘা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।-পিএনএস
দ্য টাইমস নিউজ বিডি